কাউখালী প্রতিনিধি ॥ পিরোজপুরের কাউখালীতে বিদ্যুতের চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনে কাউখালী উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়িত হওয়ার পড়েও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেন। আকাশে মেঘ দেখলেই বিদ্যুতের লাইন বন্ধ থাকে। বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি না থাকলেও অদক্ষ কর্মকর্তা কর্মচারীদের লাইন সম্পর্কে কোনো ধারনা না থাকায় লাইন সংস্কার করতে দীর্ঘ সময় লাগে বলে অনেক গ্রাহকেরই অভিযোগ। প্রতিদিন বিদ্যুতের অব্যবস্থাপনায় উপজেলায় ১৭ হাজার গ্রাহক ভোগ করছে বিদ্যুতের এই ভেলকিবাজি। উপজেলায় ৯০০ কিমি. বিদ্যুতের লাইন সচল রাখার জন্য মাত্র ৩ জন লাইনম্যান দিয়ে গ্রাহক সেবাসহ সংস্কার কার্য পরিচালনা করছে পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারেক আলী মীর জানান, বৈরী আবহাওয়ার নাম করে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুতের লাইন বন্ধ থাকে। ফোন করলে বলে পাওয়ার গ্রিডের অবস্থা খারাপ ২/৩ ঘণ্টা পর ছাড়া সার্ভিস চালু করা সম্ভব নয়। অভিযোগ আছে, আকাশে মেঘ দেখলেই বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে দেয়। আবার সামান্য বৃষ্টি হলে সারাদিনেও বিদ্যুতের দেখা মিলে না। গত ২ সপ্তাহ পর্যন্ত বিদ্যুতের এই ভেলকিবাজিতে গ্রাহকরা অতিষ্ঠ হয়ে মানববন্ধনসহ আন্দোলন করার হুমকি দিলে গত বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সঙ্গে গ্রাহক প্রতিনিধিদের সভা হয়। সভার সিদ্ধান্ত ছিল গত শনিবার থেকে বিদ্যুতের কোনো বিপর্যয় ঘটবে না। অথচ তারপরও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি বলে অভিযোগ করেন চিরাপাড়ার আব্দুর রহিম, কাউখালীর বিমল দেবনাথসহ সব গ্রাহকরা। উপজেলার ব্যবসায়ীরা জানান, বিদ্যুৎ সার্ভিস না থাকলেও বিদ্যুৎ বিলের কোনো ঘাটতি নেই। তারা অভিযোগ করেন, একে তো করোনায় ব্যবসা বাণিজ্য স্থবির আবার তার ওপর বিদ্যুতের এই অব্যবস্থাপনা ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করছে। সব মিলিয়ে পল্লী বিদ্যুতের এই অব্যবস্থাপনা অযোগ্য অদক্ষ লাইন ম্যান টেকনিশিয়ানের কারণে উপজেলাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এর মাশুল গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। বিদ্যুতের এই আসা যাওয়ায় ইলেকট্রনিক্স মালামালগুলো গ্রাহকদের নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে উপজেলা শহরের সিয়াম কম্পিউটারের সত্ত্বাধিকারী সিয়াম হোসেন জানান। এ ব্যাপারে কাউখালী উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম জানান, ভাণ্ডারিয়া সাব-স্টেশনের যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিলে এবং আবহাওয়া খারাপে গাছপালার ডাল পড়ে লাইনের সমস্যা দেখা দেয়। ২-১ দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধান করা হবে। এদিকে লাইনম্যান শিবেন মজুমদার জানান, ১৭ হাজার গ্রাহককে এবং ৯ হাজার কিলোমিটার লাইনে ৩ জন টেকনিশিয়ান দ্বারা সামাল দেয়া অসম্ভব। দিনে ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস দিয়েও লাইন ঠিক করা সম্ভব হয় না।
Leave a Reply